ফ্রিল্যান্সিং কাজে সবচেয়ে বড় ভুল


মানুষ ভুল থেকে শেখে ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে একথা সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। প্রতিপদে সমস্যায় পড়ে তাদেরকে শিখতে হয়। প্রত্যেকেরই রয়েছে নিজস্ব নানারকম অভিজ্ঞতা। নিজে ঠকার আগে অন্যের অবস্থা থেকে কি শেখা যায় না!
কোন কাজগুলি সবচেয়ে বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে জেনে নিন। হয়ত আগে থেকেই সাবধানে থাকতে পারেন।
. কমদাম
 প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারই মনে করেন তাকে হয়ত কম টাকা দেয়া হচ্ছে। তারপরও কম টাকায় কাজ করতে হয়। যখন ঘন্টা হিসেবে কাজ করা হয় তখন বিষয়টি আরো জটিল হয়ে দাড়ায়। আপনি ঘন্টা কাজ করলে ঘন্টা হিসেবে ঘন্টার টাকা পাবেন। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি সেকাজ করতে পারেন আধ ঘন্টায়। তিনি কত টাকার বিল করবেন ? তিনি আধ ঘন্টা কাজ করেছেন সেটা ঠিক, কিন্তু তার যে অভিজ্ঞতা সেটা অর্জন করতে বহু বছর ব্যয় করতে হয়েছে। তার মুল্য কোথায় ?
 যদি সত্যিকারের মুল্য হিসেব করতে হয় তাহলে সময়, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা সবকিছু মিলিয়ে মুল্য হিসেব করুন।
. অতি-ততপরতা
 আপনি একজন ক্লায়েন্টে কাজ করবেন, তাকে খুশি করার জন্য যত দ্রুত সম্ভব করে দেবেন। সেটা অবশ্যই ঠিক, কিন্তু আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার। এর অর্থই হচ্ছে আপনি এর বাইরেও অন্য কিছু কাজে সময় ব্যয় করেন। কি হবে যদি অন্য কাজের কারনে সেই সময়ে কাজটি করে দিতে না পারেন ? অসংখ্য কারন ঘটতে পারে যেখানে আপনি যে হিসেব করেছেন সেই হিসেবে গড়মিল হতে পারে।
 যে সময়ে কাজ করা সম্ভব তারথেকে বেশি সময় হাতে রেখে বিষয়টি সামাল দিতে পারেন।
. বিক্রি করতে না পারা
 ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি আপনার দক্ষতা বিক্রি করবেন। আপনি ভাল কাজ জানেন, অণ্যের কাজ ভালভাবে করে দিতে পারেন কিন্তু তারা আপনার মুল্যায়ন করতে পারছেন না। নিশ্চয়ই কোথাও গড়মিল রয়েছে। আপনি বুঝাতে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা কি চায়।
 অন্যে যেভাবে চায় সেভাবে চিন্তা করুন। এমনভাবে প্রস্তাব দিন যেন তারা তাদের উপকার মনে করে। মনোযোগ দিয়ে শুনুন, নিজে কথা কম বলুন।
. সবসময় হ্যা বলা
 হ্যা না বললে কাজ হাতছাড়া হবে সেকারনে হ্যা বলতে হবে, এটা বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ক্লায়েন্ট যে কাজ করাতে চান তিনি সে বিষয়ে যথেষ্ট জানবেন এমন কথা নেই। তিনি ভুল বললেও যদি খুশি করার জন্য হ্যা বলে যান তাতে তিনি সন্তুষ্ট নাও হতে পারেন। তার সব কথার সাথে একমত না হয়েও তারসাথে ভাল বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখতে পারেন।
. যোগাযোগ না রাখা
 আপনার কাজে কেউ খুবই খুশী হয়েছে। কাজ নেই বলে তারসাথে কোন সম্পর্ক না রাখা একটি ভুল। তার কাজ না থাকলেও অন্যের কাজের জন্য আপনার কথা উল্লেখ করতে পারেন তিনি। আপনার কাজে যিনি সন্তুষ্ট তিনি আপনার পক্ষেই মত দেবেন।

 কাজ থাকুক বা না থাকুক, ক্লায়েন্টের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে চেষ্টা করুন।

ইন্টারনেটে আয় সম্পর্কে ১০টি ভুল ধারনা

ইন্টারনেট ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন বর্তমানে অত্যন্ত আলোচিত বিষয়। বিভিন্ন সুত্র থেকে যারা এবিষয়ে খোজখবর নিচ্ছেন তারা প্রায়ই কিছু ভুল ধারনার শিকার হন।  একাজে হাত দেয়ার আগে ভুল ধারনাগুলি সম্পর্কে জেনে নিন।
খুব সহজে, বিনা পরিশ্রমে ইন্টারনেটে আয় করা যায়
এটা সবচেয়ে বড় ভুল ধারনা। আপনি আশা করছেন একজন চাকুরীজীবী কিংবা ব্যবসায়ীর থেকে বেশি আয় করবেন অথচ পরিশ্রম করবেন না এটা বাস্তবসম্মত হতে পারে না। ইন্টারনেটে যে পদ্ধতিতেই আয় করুন না কেন, আপনাকে যথেস্ট সময় এবং মেধা ব্যয় করতে হবে।
ইন্টারনেটে আয় করা সকলের পক্ষে সম্ভব না
এটা আরেকটা বড় ভুল ধারনা। ইন্টারনেটে কাজ বলতে যেমন দক্ষ প্রোগ্রামিং বুঝায় তেমনি তুলনামুলক সহজ গ্রাফিক ডিজাইন বুঝায়, কিংবা আরো সহজ ডাটা এন্ট্রি বুঝায়। যে কোন শিক্ষিত মানুষের পক্ষে মানানসই কাজ খুজে নেয়া সম্ভব। তবে একথা অবশ্যই ঠিক, দক্ষতা যত বেশি আয়ের সুযোগ তত বেশি। দক্ষতা যেহেতু বাড়ানো যায় সেহেতু সুযোগও বাড়ানো যায়।
পেইড-টু-ক্লি (PTC) সহজে আয়ের কার্যকর পদ্ধতি
পিটিসি হচ্ছে কোন ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট লিংকে ক্লিক করবেন আর আপনার নামে টাকা জমা হবে। বিষয়টি সত্যি। তবে যতটা প্রচার করা হয় ততটা না। আপনি কতগুলি ক্লিক করার সুযোগ পাবেন সেটা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। কাজ করে টাকা না পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
ইন্টারনেটে আয় করতে নিজের খরচে ওয়েবসাইট তৈরী করতে হয়
একেবারে বিনামুল্যে ওয়েবসাইট তৈরী করা যায়। কাজেই ওয়েবসাইট তৈরী, ডোমেন কিংবা হোষ্টিং এর খরচ ছাড়াই সব কাজ করা সম্ভব। তবে নিজস্ব ডোমেন-হোষ্টিং সবসময়ই ভাল।
ক্রেডিট কার্ড বা পে-পল একাউন্ট নেই, ফলে একাজ সম্ভব না
কিছুটা সত্যি। ক্রেডিট কার্ড থাকলে কাজের সুবিধে হয়, পে-পল একাউন্ট থাকলেও সুবিধে হয়। তারপরও মানুষ কাজ করছে এগুলি ছাড়াই। অন্য যে পদ্ধতিগুলি রয়েছে সেগুলি ব্যবহার করে কাজ করা সম্ভব।
 অনেকগুলি সাইটে অনেকগুলি এডসেন্স ব্যবহার করলে আয় বেশি
এডসেন্সে লাভ দেখে অনেকেই একাধিক এডসেন্স একাউন্ট ব্যবহারে আগ্রহি হন। এটা ভুল পথ। গুগল কোনএকসময় সেটা ধরে ফেলবে এবং সবগুলি একাউন্ট বন্ধ করে দেবে।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) সফটঅয়্যার ব্যবহার করলে দ্রুত আয় বাড়ে
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের জন্য সফটঅয়্যার ব্যবহার করলে অবশ্যই সাইটের পরিচিতি বাড়ে কিন্তু এডসেন্সকে টার্গেট করে যদি সেটা করেন তাহলে গুগল সেটা পছন্দ করে না। গুগল এমন সাইটে লাভজনক এডসেন্স বিজ্ঞাপন দেয় সেখানে ভিজিটর নিজে আগ্রহি হয়ে যায়। ফলে কোন সাইটে প্রতি ক্লিকে পাওয়া যায় কয়েক সেন্ট, কোন সাইটে কয়েক ডলার।
ইন্টারনেটে আয়ের জন্য কোন খরচ নেই
বিনামুল্যের সবসময়ই কিছু খারাপ দিক থাকে। ভাল হোষ্টিং, প্রয়োজনীয় সফটঅয়্যার, প্রচারের জন্য এডওয়ার্ডস বিজ্ঞাপন সবকিছুই ভাল আয়ের সহায়ক।
 ইন্টারনেটে আয়ের ক্ষেত্রে ভৌগলিক সীমারেখা নেই
অনেক সেবার ক্ষেত্রেই অনেক দেশে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বাংলাদেশে যেমন পে-পল ব্যবহার করা যায় না, ক্লিক ব্যাংকে একাউন্ট খোলা যায় না, কোন কোন সাইটে ঢোকা যায় না ইত্যাদি। কোন সেবা কোনদেশে প্রযোজ্য আগে জেনে নেয়াই ভাল।
 ইন্টারনেটে কিভাবে কাজ করতে হয় শেখার জন্য কোর্স করা প্রয়োজন

আপনি যখন আয় করতে চান ইন্টারনেট ব্যবহার করে, তখন শেখার জন্যও ইন্টারনেট সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন যায়গা। যে বিষয়ই জানতে চান না কেন, ইন্টারনেট সার্চ করলে তথ্য পাওয়া যাবে। বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সদস্য হোন, ফোরামে যোগ দিন, সেখানকার বক্তব্যগুলি বোঝার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে সেখানে সমস্যার কথা জানান। কেউ না কেউ উত্তর দেবেন।